মুক্তিযুদ্ধে কয়লার দিয়াড় গ্রামবাসী গৌরবময় ভূমিকা পালন ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর
অংশগ্রহণ ছিল সর্বাত্মক ও স্বতঃস্ফূর্ত। স্থানীয়
মুক্তিযোদ্ধা ও জনসাধারণের বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ে
মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কে পাকবাহিনীর কবল থেকে
মুক্ত করা সম্ভব হয়। ১০ ডিসেম্বর তারিখে মুক্তিযোদ্ধারা মহানন্দা নদীর অপর পাড় থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দখলের জন্য অগ্রসর হন। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর তৎকালীন সেক্টর কমান্ডার কাজী নূরুজ্জামানের নির্দেশে প্রায় পঞ্চাশজন যোদ্ধার এই দলের নেতৃত্ব দেন।
মহানন্দা
তীরে এসে উপস্থিত হলেও ১৩ ডিসেম্বরের পূর্বে তিনি নদী পার হয়ে শহরে প্রবেশ করতে পারেননি। ঐদিন রাতে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর তাঁর বাহিনীকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করে শহর আক্রমণের জন্য প্রেরণ করেন। তিনি
নিজে একটি অংশের নেতৃত্বে থাকেন এবং সহযোদ্ধাদেরকে নিয়ে গভীর রাতে মহানন্দা
পেরিয়ে শহরের উপকণ্ঠে এসে উপস্থিত হন। রেহাইচর
নামক স্থানে শত্রুসেনাদের
সঙ্গে তাঁর লড়াই হয়।
বীরদর্পে যুদ্ধ করে জাহাঙ্গীর যখন পাকবাহিনী ও তাদের
দোসরদেরকে রণাঙ্গন থেকে পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য করছিলেন, তখনই শত্রুর নির্মম বুলেট এসে তাঁর কপালে বিদ্ধ হয়। শহীদ হন
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। তাঁর বীরত্বপূর্ণ
লড়াই ও সাহসী রণপরিকল্পনার কারণে ১৪ ডিসেম্বর তারিখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কে মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুমুক্ত করতে সক্ষম হন। শহীদ জাহাঙ্গীরকে ঐতিহাসিক ছোট সোনা মসজিদ প্রাঙ্গণে সমাধিস্থ
করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বীরত্বগাঁথা অমর হয়ে আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ তথা বাংলাদেশের মুক্তিপাগল জনগণের হৃদয়ে।
মুক্তিযুদ্ধে কয়লার দিয়াড় গ্রামবাসী গৌরবময়
ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের
সময় যে এগারটি
সেক্টরে বিভক্ত হয়েছিল তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৭নং সেক্টরের আওতাভুক্ত
হয়ে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করে। দীর্ঘ
নয় মাসের যুদ্ধ
শেষে ১৬ই ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সম্পূর্ণরুপে শত্রুমুক্ত হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গৌরবময়
সন্তান হচ্ছেন-
ক্যাপ্টেন
মহীউদ্দিন জাহাঙ্গীর
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর
নাজমুল হক
মেজর গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী
লেঃ রফিকুল ইসলাম
লেঃ আব্দুল কাইউম খান
কয়লার দিয়াড় গ্রামের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা:-
১. শহীদ আনিসুর
২. শহীদ সাত্তার
৩. মোঃ আঃ মালিক
৪. মোঃ আঃ সালেক (মাস্টার )